We have been fortunate to score an interview with the renowned psychologist Ms. Kumarica Dutta. We thank her for sending us answers to some troublesome and popular questions regarding anxiety issues.

Here is the video interview (including BANGLA subtitles).

Kumarica Dutta Talks About Anxiety in India

Bengali Transcript

www. ourclearminds.com

আমাদের ফেসবুক পেজ- our clear minds

মনোবিদ কুমারীকা দত্ত

প্রথমেই আমার দর্শকদের সকলকে নমস্কার জানাই। আমার নাম কুমারীকা দত্ত। আমি একজন মনোবিদ, এছাড়া স্ট্রেস ও ক্রাইসিস কীভাবে ম্যানেজ করতে হবে, সেই ব্যাপারেও পরামর্শ দিয়ে থাকি। আমার এই পেশায় প্রায় দুই বছর হতে চলল। আমার সাইকোলজির উপরে কোর্স ও ট্রেনিং করা আছে যাতে প্রয়োজন মত আমি বাচ্চা, কিশোর কিশোরীদের ও প্রাপ্তব্যস্ক সবাইকে সাহায্য করতে পারি।

এর পাশাপাশি আমি বয়স্কদের জন্য পরিষেবা শিশু মনসত্ত্ব ও ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সিবিটি বা কগনেটভ বিহেবিয়ারাল থেরাপি এবং রিল্যাক্সেশন থেরাপির ব্যাপারেও সাহায্য করে থাকি। এই দুই বছরের কাজে আমি সব বয়সের প্রচুর মানুষকে সাহায্য করেছি তাদের সহ্যক্ষমতা বাড়াতে, মানসিক সমস্যা থেকে বেড়িয়ে আসতে। এছাড়া মানসিক ভাবে যাতে তারা আরো ভালো থেকে সেই চেষ্টাও করেছি। তারা যাতে আবার আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়, সেই ব্যবস্থাও করেছি।

আমি Our Clear mind ওয়েবসাইটকে, ধন্যবাদ জানাতে চাই, কারণ আমি সহজেই আরো অসংখ্য মানুষের মাঝে মানসিক সমস্যা নিয়ে আমি এই সচেতনাতা ছড়িয়ে দিতে পারছি বলে। মানুষকে আরো সচেতন করতে পারছি বলে। এই ওয়েবসাইতে খুব সহজ ভাবে মানসিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়, যাতে সাধারণ মানুষ খুব সহজেই বিষয়গুলো সম্পর্কে বুঝতে পারে ও মানসিক সমস্যা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে পারে।

আবারো ধন্যবাদ জানাতে চাই এই ইন্টারভিউয়ের জন্যে। এবার ইন্টারভিউটা শুরু করা যাক।

প্রশ্নগুলো এবারে দেখে নেওয়া যাক।

তো, প্রথম প্রশ্ন হল আপনার পেশা সম্পর্কে যদি কিছু বলেন?

আমি এই প্রশ্নের উত্তর প্রথমেই বলেছি যেহেতু তাই এখন আবার নতুন করে কিছু বলছি না। তাই এখন দ্বিতীয় প্রশ্নে আসা যাক।

২ নং. প্রশ্ন হল আমি কতদিন এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ও কতজন রোগীকে প্রতিদিন সামলাতে হয়?

আগেই বলেছি মনোবিদ হিসাবে আমি প্রায় দুবছর ধরে কাজ করে চলেছি। আমাকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরণের ও বিভিন্ন বয়সের মানুষকে সাহায্য করতে হয়। বিভিন্ন বয়সের মানুষের সঙ্গে কথা বলার ফলে, তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার ফলে আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতে আমিও মানসিক ভাবে সমৃদ্ধ হয়েছি। এছাড়া কাজের চাপ বলতে প্রতিদিন যেমন সংখ্যক রোগী আসে, তার উপরেই সাধারণত নির্ভর করে থাকে।

এইছাড়াও আমি একটা হেল্পলাইনের সঙ্গে যুক্ত যেখানে আমি মনোবিদ হিসাবে মানুযকে সাহায্য করে থাকি।
আমি মোটামুটি প্রায় যারা মানসিক ভাবে যারা খারাপ পরিস্থতির মধ্যে দিয়ে যায় তাদেরকে ফোনের মাধ্যমে
সাহায্য করে থাকি।

করোনা অতিমারীর সময়ে প্রচুর মানুয সাহায্যের জন্যফোন করত, কিন্তু, এখন করোনার পরিস্থিতি থিতিয়ে আসার কারণে ফোনের সংখ্যা তুলনামূলক কম। এবং মোটামুটি সেইমতই কাজ এগিয়েছে।

এবার প্রথম প্রশ্নের একদম শেষের দিকে চলে এসেছি, যেখানে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে আমি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছি কীনা?

হ্যাঁ, আমি একটা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত যার নাম মাইন্ড ক্রাফট, এই প্রতিষ্ঠানের প্রধাণ হলেন শ্রেয়া দাস। তিনি একজন রিহ্যাবিটেশন সাইকোলজিস্ট। প্রায় এগারো বছর ধরে মনোবিদ হিসাবে কাজ করে চলেছেন। আমি এনার কাছ থেকে ট্রেনিং ও ও যাবতীয় গাইডেন্স পেয়েছি। বর্তমানে আমি তার অধীনেই কাজ করে চলেছি প্রায় দুই বছর হতে চলল।

পরবর্তী প্রশ্নেরও দুটো ভাগ আছে। আর আমি সেই ভাবেই উত্তর দিচ্ছি। দ্বিতীয় প্রশ্ন হল-

আপনার মতে, কখন একজন মানুষের অ্যাংজাইটি বা উদ্বেগ প্রকাশ করা খুবই স্বাভাবিক? এবং কখন আমাদের ডাক্তার দেখানো উচিৎ?

প্রথমেই কখন আ্যাংজাইটি প্রকাশ করা স্বাভাবিক, তার আগে জেনে নেওয়া যাক

এই অ্যাংজাইটি বা উদ্বেগ কাকে বলে?

আমরা কখনো আমাদের অতীত জীবনের ঘটনা নিয়ে অ্যাংজাইটি অনুভব করি না, বা বতর্মান নিয়েও অ্যাংজাইটি অনুভব করি না। আমরা সবসময় ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করি। শুধুই ভবিষ্যৎ নিয়ে।
যে ভবিষ্যতের উপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। যা আমরা আগে থেকে জানতে পারি না। এর থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, আমরা তখনই অ্যাংজাইটি অনুভব করি, যখন কোনো বিষয়ের উপর বা কোনো ঘটনার উপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আর এই আমাদের মধ্যে উদ্বেগটা দেখা যায় যখন আমরা বুঝতে পারি যে কোনো বিশেষ বিষয়ের উপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, আমরা যেমন ভাবে চাচ্ছি তেমন ভাবে হচ্ছে না, ফলত, আমরা বুঝতে পারছি না যে কী হতে চলেছে? এইসময় আমাদের মনে হতে থাকে হে ভগবান, কী যে হতে চলেছে, কে জানে? আর এই বুঝতে না পারার কারণেই আমরা অ্যাংজাইটি অনুভব করে থাকি।

তো যখন আমরা খুব চিন্তায় পড়ে যাই, দুটো জিনিস আমাদের মধ্যে চলতে থাকে। একটা হল- আমরা মনে কী কী অনুভব করে থাকি, আরেকটা হল- সেই সময় আমাদের শরীরে কী চলতে থাকে?

আমরা এই সময় মানসিক ভাবে খুবই অস্বস্তি অনুভব করে থাকি, স্বচ্ছন্দ বোধ করি না। কী করব বুঝতে পারি না, সবকিছুই কেমন খাপছাড়া মনে হতে থাকে। প্রচন্ড সন্দেহ ও ভয় আমাদের ঘিরে ধরে।

আর এই সময় আমাদের শরীরের মধ্যে আমরা বুঝতে পারি যে বুকের ধুকপুকানি খুব বেড়ে গেছে, আমাদের মাথা ঝিমঝিম করতে থাকে, মনে হয় যেন অজ্ঞান হয়ে যাব। আমদের মধ্যে সেই খাওয়ার ইচ্ছেটাই মরে যায়। এছাড়া ডায়রিয়া বা পেট খারাপের সমস্যায় ভুগে থাকি। খুব ঘন ঘন আমাদের বাথরুমে যেতে হয়, এবং কখনো কখনো ভয়ে কাঁপতে থাকে।

তাহলে এবার বলা যাক আমাদের রোজকার জীবনে অ্যাংজাইটি বা উদ্বেগ স্বাভাবিক কীনা?

অ্যাংজাইটি অনুভব করা খুবই স্বাভাবিক এবং আমরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো বিষয়ে অ্যাংজাইটতে ভুগে থাকি। ধরা যাক, আমরা কোনো পরীক্ষা দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। সেই কারণে আমাদের প্রচন্ড চিন্তা হচ্ছে। আমরা কোনো রাস্তা পার করব, মনে মনে আমরা একটু হলেও উদ্বেগ অনুভব করে থাকি, যে ঠিকঠাক ভাবে রাস্তা পার করতে পারব কীনা? বা ধরা যাক, কোনো সম্মেলনে কোনো বিষয় নিয়ে বক্তৃতা দেব, তাখনও কিন্তু আমরা মনে মনে চিন্তা করে থাকি। বা যখন আমরা আমাদের রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা করে থাকি, তখনও আমরা খুবই চিন্তার মধ্যে থাকি। এমন কতবার হয়েছে যে, আমরা ডেন্টিস্টের কাছে গিয়েছি আমাদের দাঁতের সমস্যা নিয়ে, আমরা তখনও কিন্তু সেই ব্যাপার নিয়ে দুশ্চিন্তা করেছি।

তো দেখা যাচ্ছে আমাদের প্রতিদিনের জীবনে কিছু না কিছু বিষয় নিয়ে আমরা অ্যাংজাইটি অনুভব করে থাকি। এবং কিছু পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দুশ্চিন্তা হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।

এখন নিশ্চয়ই তোমার মনে হচ্ছে যে যদি অ্যাংজাইটি হওয়াটা যদি এতই স্বাভাবিক আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে, তাহলে কেন কিছু মানুষকে ডাক্তারের কাছে যেতে হয় অ্যাংজাইটি কমানোর জন্য?

তো সেক্ষেত্রে বলে যেতে পারে, যদি আমরা সবসময় অ্যাংজাইটি অনুভব করে থাকি, অথবা আমরা সমস্ত কিছু নিয়েই দুশ্চিন্তা করে থাকি, আর এই ক্রমাগত দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ যদি আমাদের কোনোরকম ভাবে সাহায্য তো করেই না, উল্টে আমরা ভয়ে আরো পিছিয়ে যাই আমাদের প্রতিদিনের কাজ করতে বাধা দেয়, যেমন সমস্ত কাজে দেরী হয়ে যাচ্ছে, বা রাতে ভালো ঘুম হচ্ছে না, এছাড়া আমাদের প্রচন্ড রকমের শরীরেও সমস্যা দেখা যাচ্ছে। সবসময় ঝিম মেরে থাকি, মন খারাপ থাকে, তখন বলা যেতে পারে যে এই অ্যাংজাইটি একটা ডিজঅর্ডারে পরিণত হয়েছে।

তাহলে সবকিছু দেখেশুনে এটাই বলা যায় যে তখনই এই স্বাভাবিক উদ্বেগ বা অ্যাংজাইটি একটা গুরুতর রোগে বা ডিজঅর্ডারে পরিণত হবে, যখন এই অ্যাংজাইটি তোমাকে রীতিমত সমস্যায় ফেলবে, তোমার প্রতিদিনের জীবনে বাধা সৃষ্টি করবে। একমাত্র তখনই তোমাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

পরবর্তী প্রশ্ন হল- যে দুশ্চিন্তা করা ও অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

সাধারণত, আমরা চিন্তা করা ও অ্যাংজাইটি করাকে ভুল বশত গুলিয়ে ফেলি, কিন্তু দুটো শব্দের অর্থ সম্পূর্ণভাবে আলাদা, এবং দুটোই ভিন্ন মানসিক অবস্থাকে বোঝায়।

আমরা চিন্তা খুব অল্প সময়ের জন্য করে থাকি। তার কারণ আমরা কোনো বিশেষ পরিস্থতির
সামনা সামনি হলে চিন্তা করে থাকি। আমরা কোনো একটা ঘটনা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করে থাকি,
নির্দিষ্ট কোনো ঘটনা নিয়ে চিন্তা করে থাকি।

যামন ধরা যাক- টাকাপয়সার সমস্যা, শরীর অসুস্থ হলে, বিবাহিত জীবনে সমস্যা হলে, যেকোনো ধরণের সম্পর্ক নিয়ে সমস্যা হলে, বা অন্য কোনো সমস্যা হলে। এবং বলা যেতে পারে যে চিন্তা করার সময়ে তুমি খুব সহজেই দুটো ব্যাপার নিয়ন্ত্রণ করতে পারো, এক- বিষয়ের কতটা গভীরে পর্যন্ত গিয়ে
চিন্তা করবে, আর দুই,- তুমি কতক্ষণ ধরে সেই বিশেষ ঘটনাটা নিয়ে চিন্তা করবে সেটাও তুমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারো।

কিন্তু অ্যাংজাইটির ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আলাদা। তো বলা যেতে পারে, দুশ্চিন্তা করা কোনোভাবেই অ্যাংজাইটি নয়, এটা অ্যাংজাইটির একটা ছোট্ট অংশ মাত্র। আর এই দুশ্চিন্তা করার ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাই কতটুকু সময় কোনো ব্যাপার নিয়ে চিন্তা করব, তা ঠিক করতে পারি। শুধু তাই নয়, আমরা সেইমত ওই বিশেষ পরিস্থিতিকে ঠিক করার জন্য যা করার দরকার , তাই করি। কিন্তু অ্যাংজাইটি সম্পূর্ণভাবেই আলাদা।

আমাদের যখন অ্যাংজাইটি হয়, তখন আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। আর আমরা শুধুমাত্র ভবিষ্যতে কী হতে পারে সেই নিয়ে অ্যাংজাইটি অনুভব করে থাকি। আমরা কখনো বর্তমান সময়ের ঘটনা নিয়ে অ্যংজাইটি অনুভব করি না। তার জন্যই অ্যংজাইটির কারণটা খুব একটা বাস্তবসম্মত নয়।

অ্যাংজাইটি হলে মানুষ তার সঙ্গে সবথেকে খারাপ কী হতে পারে সেই ব্যাপার নিয়েই সবসময় ভেবে চলে। খারাপ ব্যাপার ঘটবেই সেটা ধরে নেয়। ভবিষ্যতে কোনো বিপদের ঘটনা ঘটবার ভয়ে আমাদের শারীরিক যে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, বা আমরা শারীরিক ভাবে যে ধরণের আচরণ করে থাকি তাই হল অ্যাংজাইটি।

অ্যাঢজাইটির কারণে সেই মানুষটা বিশেষ কোনো বিষয় নিয়ে খুব বেশী মাথা ঘামাতে থাকে, এবং সবসমবই তারা সেই বিষয়টা নিয়ে খুব বেশী চিন্তা করতে থাকে। কী ধরণের সমস্যা আসতে পারে, যেটা তারা কিছুতেই নিয়নত্রণ করতে পারবে না। সেই কারণেই মানুষ শারীরিক ভাবে ও মানসিকভাবে সেই আগাম ঘটনার কারণে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে থাকে।

আর শুধুমাত্র এই কারণেই কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তা করাটা কোনো রোগ নয়, আর অ্যাংজাইটির কারণে
যখন আমরা নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে আক্ষম, তখন অ্যাংজাইটি রোগে পরিণত হয়।

৩ নং প্রশ্ন হল- এমন কোনো মেডিকেল টেস্ট আছে যার সাহায্যে বুঝতে পারব যে আদৌ আমার অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার আছে কীনা?

না, এরকম কোনো মেডিকেল নেই যা বলতে পারে যে আমার অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার আছে কীনা?
তবে কিছু সাইকোলজিকাল টেস্ট আছে যা কীনা একটা ধারণা দিতে পারবে যে অ্যাংজাইটি কেন হচ্ছে, কী ধরণের অ্যাংজাইটি, সমস্যার গভীরতা এবং অ্যাংজাইটির পরিমাণ খুব বেশী, না মাঝারি না অল্প পরিমাণ, তার ধারণা দিতে পারবে। এটা কী স্টেট অ্যাংজাইটি নাকি ট্রেইট অ্যাংজাইটি ? (অবস্থাগত নাকি স্বভাবগত)

তার মানে, যদি তোমার অ্যাংজাইটি বিশেষ কোনো কারণে হয়ে থাকে, মানে যদি তুমি সবসময় দুশ্চিন্তা না করে থাকো, শুধুমাত্র কোনো বিশেষ সময়েই অ্যাংজাইটিতে ভুগে থাকো, সেইসময় তোমার দুশ্চিন্তা
প্রচন্ড রকমের বেড়ে যায় কিন্তু তুমি যদি ট্রেইট অ্যাংজাইটিতে ভুগে থাকো, তোমার স্বভাবের মধ্যেই
দুশ্চিন্তাটা লুকিয়ে থাকে, তোমার আচরণের মধ্যে থাকে, এবং সময়ে সময়ে বা অবস্থা অনুযায়ী দুশ্চিন্তাটা বেড়িয়ে আসে ও প্রচন্ড আকার ধারণ করে।

চতুর্থ প্রশ্নে চলে যাওয়া যাক- আমাদের যখন অ্যাংজাইটি হয় কোনো বিষয় নিয়ে, তখন আমাদের বুক কেউ চেপে আছে বলে কেন মনে হয়? এছাড়া শ্বাস নিতে কেন অসুবিধে হয়? আমরা কীভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি?

এই যে বুক কেউ চেপে আছে বলে মনে হওয়া বা শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া এই সবকিছুই হচ্ছে যেহতু আমরা সেই সময় আমাদের সামনে বিপদ আসতে চলেছে বলে মনে করতে থাকি।

তাহলে আমাদের কী করা উচিৎ এই ধরণের শারীরিক অসুবিধা দূর করার জন্য? যেমন বুকের মধ্যে অস্বস্তি, শ্বাস নিতে অসুবিধা ও অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে?

তো যেটা আমাদের করতে হবে তা হল- আমাদের কিছু শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার ব্যায়াম করতে হবে সেই অ্যাংজাইটির সময় নিজেদেরকে শান্ত করার জন্য।

কারণ যখনই আমরা প্রচন্ড উদ্বেগ অনুভব করে থাকি, আমাদের শরীরের পেশি টানটান হয়ে যায়। সেই কারণেই আমাদের এই সমস্ত শারীরিক সমস্যা হয়ে থাকে। তাহলে সেক্ষেত্রে প্রথম যেটা আমাদের করতে হবে তা হল – ভালো করে শ্বাস নেওয়া ও শ্বাস ছাড়া।

তোমাকে এই শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার কাজটা করতে হবে ৪ —- ৭ — ৮ এই পদ্ধতিতে। পদ্ধতিটা হল যে ৪ সংখ্যা পর্যন্ত গুণতে গুণতে শ্বাস নাও, শ্বাসটা ধরে রেখে মনে মনে ৭ সংখ্যা পর্যন্ত গুণতে থাকো।
তারপরে শ্বাসটা ছাড়তে ছাড়তে ৮ সংখ্যা পর্যন্ত গুণতে থাকো।

আরেকটা যে পদ্ধতি তুমি কাজে লাগাতে পারো, যখন অ্যাংজাইটির কারণে তোমার অসুবিধা হবে, তা হল- কোনো শান্ত চুপচাপ জায়গায় যাও, আরাম করে বসো বা শুয়ে পড়ো, এবং বড় বড় করে শ্বাস নাও
ও বড় বড় করে শ্বাস ছাড়ো। এবার চোখ বন্ধ করে নিয়ে নিজেকে বার বার এটাই বলতে থাকো যে আমি আস্তে আস্তে শান্ত হচ্ছি, আমার শরীরও আস্তে আস্তে শান্ত হচ্ছে, আমি শান্ত,—– আমি শান্ত,—— আমি শান্ত। 🙂 এটা ততক্ষণ পর্যন্ত করে যাও, যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি শারীরিক ভাবে ভালো ও সুস্থ আনুভব করছ।

পঞ্চম প্রশ্ন হল- কতদিন পর্যন্ত অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারে কেউ ভুগতে পারে? এই সমস্যা কী পুরোপুরি সেরে যেতে পারে নাকি কিছু সমস্যা রয়েই যাবে?

কোনো মনোবিদ এই কথা বলতে পারে না যে, কতদিন পর্যন্ত একটা সমস্যা থাকতে পারে। অ্যাংজাইটি কমে যাচ্ছে আবার বেড়ে যাচ্ছে, এমনটা হয় না। অ্যাংজাইটি বিভিন্ন কারণের জন্য হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরণের ঘটনা এর জন্য দায়ী।

যত তাড়াতাড়ি তুমি এই সমস্যা ডাক্তারের কাছে বা মনোবিদের কাছে নিয়ে যাবে, তত তাড়াতাড়ি তুমি সেরে উঠবে। এবং নিজের প্রতিদিনের শান্তিপূর্ণ জীবনে ফিরে যেতে পারবে, তোমার প্রতিদিনের জীবনে
যে সমস্যা তৈরী হচ্ছিল, তা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারবে।

৬ নং প্রশ্ন হল- অনেকেই বলে থাকে যে, অ্যাংজাইটি থাকা ভালো, এটা কি সত্যি?

আমি ভিডিওর শুরুতেই যে কথাটা বলেছি, বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে অ্যাংজাইটি করাটা খুবই স্বাভাবিক। কিছু কিছু সময়ে অ্যাংজাইটি অনুভব করা খুবই স্বাভাবিক। অ্যাংজাইটি হওয়াটা কিছু কিছু ক্ষেত্রে খুবই ভালো যদি তুমি অ্যাংজাইটির কারণে আরো ভালো কাজ করতে পারো।

যেমন ধরা যাক, একজন শিক্ষার্থী যদি তার পরীক্ষার কারণে চিন্তায় থাকে, তাহলে সে কিন্তু মনোযোগ দিয়ে পড়বে। তার যে এই দুশ্চিন্তা, ভয়ের ফলে সে ভাবতে বাধ্য হবে যে, না পড়লে কী হতে পারে, এবং তার ফলে সে আরো মন দিয়ে পড়াশোনা করবে পরীক্ষার জন্য। বা ধরা যাক, কেউ একজন সম্মেলনে বক্তৃতা দেবে, তার ফলে তার যে এই দুশ্চিন্তা , সেই দুশ্চিন্তা থেকে সে আরো ভালো ভাবে প্রস্তুতি নেবে।

অল্প পরিমাণে অ্যাংজাইটি থাকলে তাতে তুমি আরো ভালো কাজ করতে পারবে। যতক্ষণ এই অ্যাঢজাইটির কারণে তুমি যদি ভালোভাবে কাজ করতে পারো, সেটা তো খুবই ভালো। কিন্তু অ্যাংজাইটির কারণে তুমি যদি ভালোভাবে কাজ করতে না পারো তাহলে সেটা ভালো নয়।

এবার সপ্তম প্রশ্নে আসা যাক, অ্যাংজাইটির সমস্যা কী বংশগত? পরিবারের সদস্যের আ্যাংজাইটি আছে কীনা কীভাবে বুঝব?

কিছু কিছু ক্ষেত্রে অ্যাংজাইটি বংশগত, অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার কিছু কিছু ক্ষেত্রে জিনগত কারণে হয়ে থাকে। আবার এটাও সত্যি যে, মানুষ ক্রমাগত দেখে দেখে ব্যাপারটাকে শিখে নেয়।

যেমন ধরা যাক, একজন মা যদি ক্রমাগত তার জীবনের কোনো ব্যাপার নিয়ে দুশ্চিন্তা করে যায়,
তার সন্তানও কিন্তু সেই ব্যাপারটা নিজের মধ্যে নিয়ে নেবে। কারণ বর্তমানে সেই বাচ্চাটার কাছে
তার মা-ই সবকিছু। তো তার মা যেমন ভাবে বিভিন্ন পরিস্থিতিকে সামলাবে, বাচ্চাটা তেমন ভাবেই সেটা শিখে নেবে। বাচ্চাটা সবকিছুই নিজের মধ্যে আত্মস্থ করবে, কোনো পরিস্থিতি সামনে এলে মায়ের মতো করে পরিস্থিতিটাকে সামলাবে। আর এই ব্যাপারটা কিন্তু পরবর্তী জীবনে অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারে পরিণত হবে। আর বাচ্চাটা সব পরিস্থিতিতেই অ্যাংজাইটিতে ভুগবে।

আরেকটা যে প্রশ্ন ছিল, তাহল- পরিবারের কোনো সদস্যের আ্যাংজাইটি আছে কীনা কীভাবে বুঝব?

তা এই পর্যায়ে এসে আমাদের খুব একটা বুঝতে অসুবিধা হবে না যে, একজন মানুষ যে সবসময় অ্যাংজাইটিতে ভুগছে, সে কীভাবে কোনো পরিস্থিতিকে সামলাবে? মনে রাখবে, অ্যাংজাইটি যার আছে,
কোনো পরিস্থিতি সামনে এলে তাতে সে অনেক বেশী প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে থাকে, কিন্তু কখনো তাতে রেস্পন্ড করে না।

আরেকটা বিষয় হল- সামান্য কারণে বা অকারণে দুশ্চিন্তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। তো এইভাবে আমরা বুঝতে পারব যে কোনটা স্বাভাবিক দুশ্চিন্তা আর কোনটা অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার।

আরেকটা বিষয় যেটা আমি বলতে চাই তা হল- এই ধরণের অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারে, কারোর অ্যাংজাইটি কোনো বিশেষ কারণে হয় না, সব বিষয় নিয়েই সেই মানুষটা অ্যাংজাইটি অনুভব করে চলে।

সুতরাং অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার- এই সমস্যার গভীরতা ও ব্যাপ্তি অনেক বেশী। আর এই ডিজঅর্ডারের অন্তর্গত আরো অনেক সমস্যা আছে ও তাদের বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন রকমের। তো আরো বিভিন্ন ডিজঅর্ডারের ব্যাপারে আরো জানতে হলে আরো দীর্ঘ আলোচনার দরকার, তবে এককথায় বলা যেতে পারে, মোটামুটি সবধরণের অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারের মূল ভিত্তি হল- দুশ্চিন্তা, ভয়,আশঙ্কা, আর শরীরের মধ্যে যে পরিবর্তনগুলো দেখা যায়, যার ফলে একজন মানুষ স্বাভাবিক যে কাজগুলো, তা করতে পারে না, এছাড়া তাদের সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক সমস্যা দেখা যায়।

তো শেষ প্রশ্নে আসা যাক- অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার থেকে ঘরে বসে মুক্তি পাওয়া সম্ভব? বা এমন কোনো ওষুধ আছে যা আমরা প্রেসক্রিপশন ছাড়াই কিনে খেতে পারব?

যেমন কোনো রোগ-ই ঘরে বসে নিজে থেকে সেরে যায় না। আমাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয়, তেমনি ভাবেই অ্যাংজাইটি যখন এমন একটা পর্যায়ে পৌছে গেল যে, সেটা ডিজঅর্ডারে পরিণত
হয়ে গেল, তাহলে সেই রোগ কখনোই ঘরে বসে ঠিক হতে পারে না।

তোমাকে ডাক্তার ও মনোবিদের সাহায্য নিতেই হবে, সম্পূর্ণ ভাবে সেরে উঠতে চাইলে।


শেষ যে প্রশ্নটা ছিল- আমরা কোনো প্রেশক্রিপশন ছাড়া ওষুধ খেতে পারব কীনা?

তো এই ব্যাপারে প্রথমেই একটা কথা বলে রাখি যেটা সকলের জানা উচিৎ। প্রচুর ধরণের মনোচিকিৎসক আছেন যারা যারা বিভিন্ন বিষয়ের উপর পড়াশোনা করে ডিগ্রি লাভ করেছেন, যার ফলে তারা বিভিন্ন ভাবে মানুযের চিকিৎসা করে থাকেন। সুতরাং, একজন সাইকিয়াট্রিস্ট শুধুমাত্র মানসিক চিকিৎসার জন্য ওষুধ দিতে পারেন অন্য আর কেউ ওষুধ দিতে পারে না, একজন সাইকিয়াট্রিস্ট হলেন একজন ডাক্তার, যার এম.বি.বি.এস পড়া আছে ও সাইকিয়াট্রির ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ।

তো প্রশ্নের উত্তরে এটাই বলা যেতে পারে যে, কোনো ওষুধ প্রেশক্রিপশন ছাড়া দেওয়া যায় না এবং প্রেশক্রিপশন ছাড়া কোনো ওষুধ কিনতে পারো না। যে কোনো ধরণের সমস্যার জন্যই এই নিয়ম
প্রযোজ্য।


একদম শেষে এটাই বলতে চাই, যদি তোমার মনে হয় তুমি খুব মানসিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছ এবং তুমি জানো না ঠিক কী করা উচিৎ যাতে তুমি সেই বিশেষ পরিস্থিতিটাকে কাটিয়ে উঠতে পারো, তাহলে তোমাকে অবশ্যই মনোবিদের কাছে সাহায্যের জন্য যেতে হবে। যে কীনা তোমাকে এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠত সাহায্য করবে ও তুমিও সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবে।

আমি আবারো our clear minds ধন্যবাদ জানাতে চাই এই অসাধারণ ইন্টারভিউটার জন্য ও আমি যে এই বিষয়ে মানুষকে আরো সচেতন করতে পারলাম তার জন্য।

Kumarica Dutta - Our Clear Minds

Ms Kumarica Dutta is a well-known trained psychologist in Kolkata, who specializes in stress and crisis management and is equally comfortable working with children, adults, and elderly.

Author: Oindrila Dev

Oindrila is a budding content writer from Kolkata. She is also a good dancer and an avid bookworm. Her connection to Our Clear Minds is of a deep and personal nature. Her goal is to help as many people as she can, spreading mental health awareness across India.

2 Replies to “Interview with Kumarica Dutta

Comments are closed.